গাজীপুরেও কঠোর লকডাউন, বিপাকে পোশাক শ্রমিকরা - Amader Bangladesh

গাজীপুর প্রতিনিধি  : সরকারের নির্দেশনা মতো গাজীপুরে লকডাউন কঠোরভাবে শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সিটি এলাকাসহ জেলার সড়ক মহাসড়কে পণ্যবাহী যান ছাড়া কোথাও দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে কোথাও কোথাও বিছিন্নভাবে রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সীমিত মানুষজন চলাচল করেছে। তবে তৈরি পোশাক কারখানা খোলা থাকায় যানবাহন সংকটে নানা ভোগান্তি নিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছেন শ্রমিকরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও  কড়াকড়ির কারণে লকডাউনের প্রথম দিনে পণ্যবাহী ট্রাক, লরি ছাড়া সব ধরনের যন্ত্রচালিত গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। সীমিত সংখ্যায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল করছে। তবে মহাসড়কের অনেক জায়গায় এসব যানবাহন পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। শিল্প কলকারখানা বিশেষত তৈরি পোশাক কারখানা খোলা রয়েছে। এতে করে নানা শ্রেণি-পেশার কর্মজীবী মানুষ বিশেষ করে পোশাক শ্রমিকরা একটু বেশি বিপাকে পড়েন। কেউ কেউ কয়েক কিলোমিটার হেঁটে কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারলেও আবার কর্মস্থল দূরে থাকায় অনেকেই বাসায় ফিরে যেতে বাধ্য হন।

শ্রকিদের অভিযোগ, নিজস্ব পরিবহন দিয়ে কারখানায় আনা-নেওয়ার কথা থাকলেও গাড়ি সংকটে তাদের রিকশা অটোরিকশায় উঠতে হচ্ছে। ভাড়া বেশি দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না গাড়ি। এ অবস্থায় তারা বলছেন, হয় যানবাহনের ব্যবস্থা করা হোক, নতুবা তাদের কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হোক।

তবে কারখানা কর্র্তৃপক্ষ বলছেন, সরকারের নেওয়া গৃহীত পদক্ষেপ ও প্রজ্ঞাপনের শর্ত মেনে স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী কারখানা খোলা রাখছেন তারা। শ্রমিকদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা, হাত ধোয়া ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে।

এদিকে, লকডাউন বাস্তবায়নে সড়ক মহাসড়কে কাজ করছে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এ কার্যক্রম চলছে। এছাড়া মহাসড়কের ২০টি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি জোরদার করেছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ।

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মামুন সরদার সাংবাদিকদের জানান, জেলা প্রশাসন ও সরকারের অন্য সংস্থাগুলো আজ সকাল থেকে শুরু হওয়া লকডাউন বাস্তবায়নে কঠোর অবস্তানে রয়েছে। যেকোনোভাবেই হোক সরকারের এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, ‘আজ সকালে আমি মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি, কোথাও কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি, বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও কোথাও দুই একজন মানুষকে রাস্তায় দেখা গেছে। এসব বন্ধ করার জন্য পুলিশের পাশাপাশি বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সেনা ও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে। শিল্প মালিকগণ সরকারের কাছে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে কারখানা খোলা রাখার অনুমতি পেয়েছেন, মালিকপক্ষ সেসব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন বলে আশা করছি।’

প্রসঙ্গত, ২১ জুন থেকেই লকডাউন চলছে গাজীপুরে। গত দুই সপ্তাহে করোনভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় রাজধানী ঢাকাকে করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে গাজীপুরসহ ঢাকার আশপাশের সাত জেলায় আগেই লকডাউন জারি করেছিল সরকার।

About Author