আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস - Amader Bangladesh
মাজহার মান্নান,
              কবি, ছড়াকার, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট : 
আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। প্রতি বছর এই দিনে এটি উদযাপন করা হয়। মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার। এ অধিকার গুলি মানুষের জন্মগত অধিকার। জাতিসংঘ ১৯৪৮ সালে সার্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণা করে। ১৯৫০ সাল থেকে এই দিনটি উদযাপন করা হয়। মানুষ জন্মগতভাবে স্বিধীন। তাই স্বাধীনতা তার সবচেয়ে বড় মৌলিক অধিকার। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে স্বাধীনতার এই জন্মগত অধিকারটি থেকে বিশ্বের বহু মানুষ বঞ্চিত। বিশ্ব মানবাধিকার আজ যেন শুধু মুখের বুলি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাস্তবে সারা বিশ্বে মানবতা আজ বিপন্ন। বিশ্বের বহু দেশ মানবতা আজ শুধু কাগজে কলমে বিদ্যমান। প্রকৃতপক্ষে তারা কোন অধিকার ভোগ করতে পারে না। প্রথমেই আসি রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর যে পাশবিকতা চালানো হয়েছে তা নজিরবিহীন। ১২ লাখ রোহিঙ্গা আজ দেশ ছাড়া। যে গনহত্যা মিয়ানমার সেনাবাহিনী চালালো তাতে বিশ্ব মানবতা যেন ডুকরে ডুকরে কাঁদছে। যে জাতিসংঘ সার্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণা দিয়েছে সেই জাতিসংঘও আজ অসহায়। নিন্দা, বিবৃত্তি আর ত্রাণ দেয়া ছাড়া মনে হচ্ছে জাতিসংঘের আর কিছুই করার নেই। ১২ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা আজ বাংলাদেশকে টানতে হচ্ছে। এরপর আসি সিরিয়া প্রসঙ্গে। কৃমি কীটে খাওয়া এক দগ্ধ লাশের চেহারা আজ সিরিয়ার মানবাধিকার। মানবাধিকার বলে সেখানে কিছু আছে বলে মনে হয় না। নির্বচারে গনহত্যা চলছে সেখানে বছরের পর বছর। পরাশক্তিগুলি তাদের নিজ স্বার্থ পুরুনে মরিয়া। তাই মানবাধিকার তাদের কাছে একটি টার্ম কাড। মানবতা নিয়ে তারা মনে খেলা করছে। সিরিয়ায় যা ঘটছে সেটাকে বর্বরতা ছাড়া আর কিছুই বলা যায না। তাহলে মানবাধিকার দিবস দিয়ে কি হবে। আজ ফিলিস্তিনিরা তাদের সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাদের ভূমির অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। পাশবিকতা চলছে তাদের সাথে। কেউ যেন দেখার নেই। যার দেখার কথা সেও যেন আজ সাক্ষী গোপাল। তাহলে মানবাধিকার দিবস পালন করে কি লাভ? আজ কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইয়েমেন, আফগানিস্থান, ইরাক ও ভেনিজুয়েলায় যা হচ্ছে তাতে তো মনে হয় না যে মানবাধিকার বলে কিছু আছে। কাশ্মিরে মুসলিমদের প্রতি যে আচরন তাও মানবতার প্রশ্নটিকে বিদ্ধ করেছে।
সারা বিশ্বে যখন মানবতার এই অবস্থা সেখানে মানবাধিকার দিবসের কতটুকু গুরুত্ব আছে? এ প্রশ্নটি আজ সবার। কি করছে জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো? তবে এই দিবস উদযাপন যে একেবারে মূল্যহীন তা বলা যাবে না। এই দিবসের মাধ্যমে বিশ্ব বিবেককে তো কিছুটা হলেও নাড়া দেয়া যায়। অসহায় মানুষের জন্য জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণা একটি মাইল ফলক। তবে এর হেফাজতকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে জাতিসংঘকে অবশ্যই ভূমিকা রাখতে হবে। এই দিবসকে কেন্দ্র করে সবার মাঝে জাগ্রত হবে বিশ্ব মানবতা এ কামনাই করি।

About Author