কূটনৈতিক প্রতিবেদক : আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামীকাল সোমবার যোগ দিবস উপলক্ষে গত ২৫ মে পাঠানো চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী ও দেশবাসীর সুস্থতা কামনা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লেখেন–
প্রধানমন্ত্রী
মান্যবরেষু,
২০১৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসেবে ঘোষণার অভূতপূর্ব সাড়া যোগব্যায়ামের সর্বজনীন আবেদনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে যা সমস্ত বাধা অতিক্রম করে। তখন থেকেই বিশ্বব্যাপী সাড়ম্বরে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালিত হয়ে আসছে।
আর কয়েক সপ্তাহ পরই বিশ্ব ৭ম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করতে যাচ্ছে। বিগত বছরের মতো এ বছরও কোভিড-১৯ মহামারির প্রকোপের মধ্যেই আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালিত হবে।
এই অবিস্মরণীয় প্রতিকূলতার মধ্যেও আমাদের কোভিড-১৯ যোদ্ধারা উল্লেখযোগ্যভাবে এই মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। মহামারির হুমকির মধ্যেও গত আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের পর থেকে বেশ কিছু ইতিবাচক ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি ও ভাইরাস বিষয়ক বৈজ্ঞানিক গবেষণার পাশাপাশি আমাদের জনগণকে রক্ষার জন্য এখন একাধিক টিকাও রয়েছে আমাদের কাছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশে টিকাদান কর্মসূচি চলছে। আমার বিশ্বাস মানবজাতি খুব শীঘ্রই এই মহামারি কাটিয়ে উঠবে।
আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘সুস্থতার জন্য যোগ’- যা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। শরীরের পাশাপাশি যোগব্যায়াম মনের জন্যও বেশ উপকারী। সকল ধরণের সাবধানতা সত্ত্বেও একজন মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু একটি শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একে মোকাবিলার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। যোগব্যায়াম আমাদের সেই প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সাহায্য করে, যেমন- শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের ফলে ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। একই সময়ে, সারা বিশ্বেই কোটি কোটি মানুষ মাসের পর মাস ঘরে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। এর ফলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও বেশ প্রভাব পড়েছে। নিয়মিত যোগাভ্যাস তাদের এই প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
যোগের একটি সহজাত শক্তি রয়েছে মানুষকে যুক্ত করার। যোগব্যায়াম সম্প্রদায়, রোগ প্রতিরোধ এবং ঐক্য এই তিনের জন্যই উপকারী। আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য সাড়া বিশ্বের মানুষের সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতার প্রতি উদ্বেগকেই প্রতিফলিত করে। এটি এমন একটি উদ্যোগ যা মানুষের শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি সুস্থতার প্রতিও গুরুত্ব দেয়।
বাংলাদেশে সফলভাবে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনে আপনাদের সহযোগিতার জন্য প্রত্যেককে আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। গত কয়েক বছরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে যোগ দিবস পালনের জন্য বাংলাদেশি ভাই ও বোনেদের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখে আমি অত্যন্ত আপ্লুত হয়েছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সামনের বছরগুলোতেও আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনে আপনার সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আমি আপনি, আপনার পরিবার ও দেশের জনগণের সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্যের কামনা করি।