সাইবুর রহমান সুমন,স্টাফ রিপোর্টারঃ- আজ ২৬ মার্চ। মহান স্বাধীনতা এবং গণহত্যা দিবস। দেশে-বিদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালণ করছে বাঙ্গালী জাতি। দিনটি যেমন জাতির জন্য আনন্দের তেমনি শোকাবহ হয়ে জাতি স্মরণ করে দিনটিকে।
স্বাধীনতা যুদ্ধ মানে গভীর আত্মত্যাগের ইতিহাস, অবিশ্বাস্য সাহস আর বীরত্বের ইতিহাস এবং বিশাল এক অর্জনের ইতিহাস। ১৯৭১ সালে যে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল,মুলতঃ তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান(পাকিস্তান) কর্তৃক বিভেদ, বৈষম্য, শোষণ আর ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান(বর্তমান বাংলাদেশ)। পূর্ব আর পশ্চিম পাকিস্তানের মাঝে শুধু যে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরত্ব তা নয়, মানুষগুলোর ভেতরেও ছিল বিশাল দূরত্ব। তাদের চেহারা, ভাষা, খাবার, পোশাক, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সবকিছু ছিল ভিন্ন, শুধু একটি বিষয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষগুলোর মাঝে মিল ছিল- সেটি হচ্ছে ধর্ম। আর তাই তো “ইসলাম ধর্ম” অনুসারী বাঙ্গালীকে কব্জা করতে শোষনের পথ বেছে নিয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান(বর্তমান পাকিস্তান)’র শাসক গোষ্ঠীরা। সবকিছুতেই পশ্চিম পাকিস্তানের ভাগ ছিল শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ। বাজেটের ৭৫% ব্যয় হতো পশ্চিম পাকিস্তানে, ২৫% ব্যয় হতো পূর্ব পাকিস্তানে(বাংলাদেশে),অথচ পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান(বাংলাদেশ) এ রাজস্ব আয় ছিল সবচেয়ে বেশি, শতকরা ৬২ ভাগ। সেনাবাহিনীর সংখ্যা পূর্ব পাকিস্তানের(বাংলাদেশ) তুলনায় পশ্চিম পাকিস্তানের সৈন্যের সংখ্যা ছিল ২৫ গুণ বেশি। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শুরু হয় স্বাধীনতার যুদ্ধ।
অবশেষে, দীর্ঘ ৯মাস যুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর/১৯৭১ সনে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পায়,তার নাম “বাংলাদেশ”। তবে এই স্বাধীনতা আনতে গিয়ে আমাদেরকে ৩০লাখ মানুষের প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছে,২লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারাতে হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ যুদ্ধাহত হয়ে পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে আছে। আমরা সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
রবিবার(২৬ মার্চ/২০২৩) সকাল ৮ টার দিকে শার্শা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে নির্মিত “বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল” এ পুষ্পমাল্য অর্পণ,অত্র উপজেলার ডিহি ইউনিয়নের কাশিপুরে অবস্থিত বীর শহীদদের স্মৃতি স্তম্ভে,বেনাপোল পোর্টথানাধীন কাগজপুকুর নামক স্থানে অবস্থিত শহীদ মিনারে, শার্শা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং শহীদদের জন্য দোয়া কামনা করা হয়। এ ছাড়াও সরকারী-বেসরকারী এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্মিত শহীদবেদীতে পুস্পমাল্য অর্পণ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ/ সংগঠক,রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠনগুলো।
এরপর দিনের কর্মসুচি হিসেবে সামাজিক ও রাজনৈতিক দলগুলোর র্যালি প্রদর্শণ এবং শার্শার রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে দৃষ্টিনন্দন কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
শার্শা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা এ সকল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শার্শার গণমানুষের নেতা,তিন তিন বার নির্বাচিত ৮৫,যশোর-১ শার্শা আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন।
এসকল অনুষ্ঠানমালায় অংশ নেন-শার্শা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আ.লীগ সভাপতি-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার-নারায়ন চন্দ্র পাল,ফারজানা ইসলাম,সহকারী কমিশনার(ভূমি),মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান-আলেয়া ফেরদৌস, সালেহ আহম্মেদ মিন্টু,সদস্য(শার্শা),যশোর জেলা পরিষদ,পুলিশের এএসপি-নিশাত আল নাহিয়ান,নাভারণ সার্কেল,শার্শা,যশোর। শার্শা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি)-আকিকুল ইসলাম,বেনাপোল পোর্টথানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মোঃ কামাল হোসেন ভূঁইয়া,শার্শা উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত)-আব্দুল্ লাহ আল রাসেল।
শার্শা উপজেলা আ.লীগ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক-অধ্যক্ষ ইব্রাহীম খলিল, ১০নং শার্শা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান-কবির উদ্দিন আহম্মেদ তোতা, শার্শা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার-মোজাফ্ফর হোসেন, বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি- এনামুল হক মুকুল।