নিবন্ধন মেলেনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অ্যান্টিবডি কিটের - Amader Bangladesh

নিজস্ব প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কারিগরি কমিটি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত অ্যান্টিবডি কিটের বিষয়ে যে সুপারিশ করেছে তা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গ্রহণ করেনি। ফলে এই কিটের নিবন্ধন দেওয়া সম্ভব নয় বলে গণস্বাস্থ্যকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

আজ বৃহস্পতিবার রাতে এ বিষয় কোভিড-১৯ র‌্যাপিড ডট ব্লট প্রকল্পের সমন্বয়কারী ডা. মহিব উল্লাহ খোন্দকার Amader Bangladeshকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

ডা. মহিব উল্লাহ খোন্দকার বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর দেশের এই জরুরি অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কারিগরি কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করেনি এবং জিআর কোভিড-১৯ র‌্যাপিড এন্টিবডি টেস্ট কিটের নিবন্ধন প্রদান করেনি। আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ শিগগির জানানো হবে।’

এর আগে আজ দুপুরে তিনি বলেছিলেন, ‘আজকে নয়দিন হয়ে গেছে এখনো ঔষধ প্রশাসন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের অনুমোদনের বিষয়ে কিছু জানায়নি। আগামী সপ্তাহে ব্যবস্থা নেবেন বলে ঔষধ প্রশাসনের একজন সহকারি পরিচালক আমাদেরকে ফোন করে জানিয়েছেন।’

মহিব উল্লাহ খোন্দকার জানান, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে তাদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অ্যান্টিবডি কিটের নিবন্ধন দেওয়া সম্ভব নয়। এই কিট ৭০ শতাংশ রোগী, যাদের ইতিপূর্বে কোভিড-১৯ হয়েছিল, তাদের শনাক্ত করা সম্ভব। এটাও গ্রহণ করেনি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

এর আগে, সক্ষমতা পরীক্ষায় নিজেদের উদ্ভাবিত অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন কিট নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। বিএসএমএমইউ অ্যান্টিবডি কিটের সক্ষমতা পরীক্ষার পর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে এটিকে কার্যকর হিসেবে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে অপর কিট অ্যান্টিজেন সক্ষমতা পরীক্ষার কাজও শুরু করেছে বিএসএমএমইউ। এখানেও সফলতা পাবে বলে মনে করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

বিএসএমএমইউ-এর দেওয়া প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী কিট ব্যবহারের অনুমতি বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। যদিও সরাসরি দেখা করার সুযোগ পায়নি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা।

গত ১৭ মার্চ দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমন শুরুর দিকে কিট সংকটের মধ্যে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস কিট উদ্ভাবনের খবর দেন ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বাধীন একটি গবেষক দল। ১৮ মার্চ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করে কিটের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান বা রিএজেন্ট আমদানির অনুমতি চায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ১৯ মার্চ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে কিট তৈরির উপাদান আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। ২৫ এপ্রিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত টেস্টিং কিটের নমুনা হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) প্রতিনিধির কাছে কিটের নমুনা তুলে দেওয়া হয়। তবে সরকারের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না।

দীর্ঘ বিতর্কের পর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গত ৩০ এপ্রিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য বিএসএমএমইউ অথবা আইসিডিডিআরবিতে নমুনা জমা দেওয়ার অনুমতি দেয়। ২ মে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য ৬ সদস্যের কমিটি করে এবং ১৩ মে তাদের উদ্ভাবিত কিট বিএসএমএমইউতে জমা দেয়। এর ৩৪ দিন পর বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত জানাল।

বিএসএমএমইউর সুপারিশে বলা হয়েছে, যেসব স্থানে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই, সেখানে অসুস্থতার দ্বিতীয় সপ্তাহে এবং করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকা স্বত্ত্বেও পিসিআরও পরীক্ষায় ফল নেগেটিভ এসেছে। সেসব  ক্ষেত্রে এই কিট কিছুটা সহায়ক হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

ডা. মহিবুল্লাহ খোন্দকার দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, ‘অ্যান্টিজেন কিটেরও সক্ষমতা পরীক্ষার কাজও চলছে বিএসএমএমইউতে। এরই মধ্যে নমুনা সংগ্রহের ডিভাইস দেয়া হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা এক সাথে কাজ করছি।’

About Author