টিকা বৈষম্য দূর করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর - Amader Bangladesh

বাসস : ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ‘টিকা বিভাজন’ দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় যোগ দিয়ে ছয় দফা প্রস্তাব পেশ করে এই আহ্বান জানান। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার ‘জাতিসংঘের সাধারণ এজেন্ডা: সমতা ও অন্তর্ভুক্তি অর্জনের পদক্ষেপ’ শীর্ষক প্রচারিত প্রাক রেকর্ডকৃত বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত, সময়ের সবচেয়ে জরুরি আহ্বান হচ্ছে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ‘‘ভ্যাকসিন বিভাজন’’ দূর করা।’ প্রধানমন্ত্রী তার দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলেন, ‘আমাদের একটি নতুন দৃষ্টান্ত প্রয়োজন যা বৈষম্যকে সামগ্রিকভাবে মোকাবিলা করবে।’ তিনি বলেন, দারিদ্র্য, ক্ষুধা, লিঙ্গ সমতা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মতো এসডিজি গুলোর সঙ্গে এর গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

তৃতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই সবচেয়ে দুর্বল দেশগুলির বিশেষ অর্থায়নের চাহিদাগুলো সমাধান করতে হবে, যার মধ্যে এলডিসি ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো রয়েছে।’ চতুর্থ প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, অভিবাসী ও চলমান লোকদের ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির অবসান অত্যন্ত জরুরি।

প্রধানমন্ত্রী তার পঞ্চম প্রস্তাবে বলেন, ‘এই বিবর্তিত ডিজিটাল যুগে সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে আমাদের কঠোরভাবে ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে হবে।’ পরিশেষে তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজে প্রকৃত ‘পরিবর্তনের নির্মাতা’ হিসাবে কাজ করার জন্য আমাদের অবশ্যই মহিলা এবং মেয়েদের জন্য আরও সুযোগ তৈরি করতে হবে।’

শেখ হাসিনা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের সাধারণ এজেন্ডা বিষয়ে মহাসচিবের প্রতিবেদনে বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের একটি উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি দরিদ্রতম এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে। তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্য, বৈষম্য এবং বাধা দূর করার ক্ষেত্রে আমাদের কয়েক দশকের উন্নয়ন পিছিয়ে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী উচ্চ পর্যায়ের এই অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য স্পেন, সিয়েরালিওন, কোস্টারিকার প্রেসিডেন্ট এবং সুইডেনের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সমতা ও অন্তর্ভুক্তি অর্জনের বিষয়টি জাতিসংঘের অভিন্ন আলোচ্যসূচিতে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য আমি এর প্রশংসা করছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তার প্রথম ভাষণে বলেন, “সকলেরই নিজের এবং পরিবারের স্বাস্থ্য ও কল্যাণের জন্য জীবনযাত্রার পর্যাপ্ত মানের অধিকার নিশ্চিত করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব রয়েছে। ”’ তিনি অভিমত প্রকাশ করেন, এই দৃষ্টিভঙ্গি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ‘আমরা এসডিজি বাস্তবায়ন এবং কোভিড থেকে পুনরুদ্ধারে ‘হোল সোসাইটি’ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছি যাতে কেউ পিছিয়ে না পড়ে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো দেশই একা এই সংকট মোকাবিলা করতে পারে না। তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক পর্যায়ে আমাদের সাহসী ও দৃঢ় পদক্ষেপ প্রয়োজন। আরও সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গড়ে তুলতে জাতিসংঘের ৭৫ তম ঘোষণাপত্রের প্রতিশ্রুতি পূরণে আমাদের বহুপক্ষীয় সহযোগিতা প্রয়োজন।’

About Author