একজন মেহজাবিন ও ভাইরাল গার্ল - Amader Bangladesh

মঈন আবদুল্লাহ : দিন যত যাচ্ছে ততই নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। গত কয়েকবছর ধরে টিভি নাটকের জগতকে একাই শাসন করে চলেছেন। ভিন্ন রূপে ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে হাজির করে চলেছেন। তার নাম মেহজাবিন চৌধুরী। এই নায়িকাকে এখন চেনেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। শুধু নাটকে অভিনয় করে মানুষের কাছে পরিচিতিই পাননি জনপ্রিয়তাও পেয়েছেন সমানতালে। ভাঙছেন, গড়ছেন, তৈরি করছেন, এগিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবছরই সুপারহিট নাটক উপহার দিচ্ছেন। বর্তমান সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের ভিউ বাড়াচ্ছেন। এত প্রশংসা দেখে হয়তো অনেকেই মনে করতে পারেন আসলেই কী মেহজাবিন এত এগিয়েছেন?

গত কয়েকদিন ধরে মেহজাবিন অভিনীত অনেকগুলো নাটক দেখলাম। সবসময়ই গতানুগতিক প্রেমের নাটকেই তাকে দেখা যায় বেশি। তবে পারিবারিক টানাপোড়েনের গল্পগুলোতে খুবই মানানসই এ অভিনেত্রী। আমার দেখা, টিভি নাটকের দুনিয়ায় নুশরাত ইমরোজ তিশার পর কেউ যদি এতটা বহুমাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করে থাকেন তিনি হলেন মেহজাবিন। তিশার বিকল্প হয়তো এখনো আমরা পায়নি। তবে মেহজাবিন যা করছেন তা আমার চোখে খুবই নান্দনিক। যেমন কাদতে পারেন, আবার হাসতেও পারেন। মধ্যবিত্তের কষ্ট যেমন ফুটিয়ে তুলতে পারেন, আবার উচ্চবিত্তের খামখেয়ালিপনাও দারুণভাবে নিজের মধ্যে তুলে নিতে পারেন।

যাক সেসব কথা, গতকাল একটি নাটক দেখার পর থেকেই মেহজাবিনকে নিয়ে লেখার ইচ্ছে হতে থাকে। নাটকটির নাম ‘ভাইরাল গার্ল’। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আজকাল অনেক কিছু ভাইরাল হচ্ছে। কিন্তু এ ভাইরালের আগে-পিছে থাকে অনেক অজানা গল্প। বিশেষ করে একজন নারী ভাইরাল হওয়ার পর কেমন পরিস্থিতির মুখে পড়েন সেটা সবার অগোচরে থাকে। এমন একজন নারীর চরিত্রে দেখা যায় তাকে।

কাজল আরেফিন অমি বানিয়েছেন এ নাটক। সময়পোযোগী গল্প নিয়ে এ নাটকটি নির্মাণ করেছেন। এখানে নির্মাতা একজন নারীর অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন। আমাদের সাইবার ক্রাইম কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। একজন নারী কোনো দোষ না করেই জীবনের নানা প্রতিবন্ধতার কাছে অসহায় হয়ে পড়ে- সেই বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে।

নাটকটিতে মেহজাবিন সাহসিকতার পরিচয় দিতে গিয়েও হার মেনেছেন। এখানে যদি মেহজাবিনকে জয়ী হিসেবে দেখানো হতো তাহলে এটা নাটকই থেকে যেত। কিন্তু পরিচালক দেখিয়েছেন একজন নারী অনেক সংগ্রাম করেছেন কিন্তু সমাজের মানুষগুলোর আচরণের কাছে হার মানেন। আসলে বাস্তবতা এটাই। নাটকে অসাধারণ অভিনয় করেছেন মেহজাবিন। নির্মাতা অমি পুরো নাটকের ফোকাস আসলে মেহজাবিনের ওপরই রাখেন।

মনোজ প্রামাণিক যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন, এতে ভালোবাসার মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আসলে বাস্তব চিত্র অনেকক্ষেত্রে এমনই হয়। নাটকটি দেখে মনে হয়েছে আসলেই নিজেকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছেন মেহজাবিন।

 

About Author