পদ্মায় বিলীন চরাঞ্চলের বাতিঘর - Amader Bangladesh

শিবচর(মাদারীপুর) প্রতিনিধি : মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বাতিঘর খ্যাত এস.ই.এস.ডি.পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন তলা ভবন পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। গতকাল বুধবার মধ্যরাত থেকে স্কুলটির ভাঙ্গন শুরু হয়। এক পর্যায়ে ভবনটির মাঝ বরাবর ফেটে গিয়ে হেলে পড়ে।

বন্দরখোলা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ইসমাইল বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ করেই বিকট শব্দ হতে থাকে স্কুলের ভবনের মধ্য থেকে। খবর পেয়ে অসংখ্য মানুষ ট্রলারে করে বিদ্যালয়টি দেখতে আসে। আমাদের সামনেই বিদ্যালয়টি মাঝখান থেকে ফাটল ধরে পেছন দিকে হেলে পড়ে।’

বিলীন হওয়া স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘শিবচরের বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে অবস্থিত স্কুলটি। গত তিনবছর চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী স্যার স্কুলটিসহ গুরুত্বপূর্ন স্থাপনাগুলোকে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে রক্ষা করার চেষ্টা  চালিয়েছেন। কিন্তু এবার বন্যা মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় স্কুলটি আর রাখা গেল না।’

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘স্কুল ভবনটি ঝুঁকির মধ্যে ছিল। তবে, বিভিন্ন কারণে স্কুলটি সেখান থেকে সরানো হয়নি। পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতের জন্য ভবনটি ভেঙে পড়েছে।’

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, ‘ওই এলাকায় নদীর ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলেছি। কিন্তু, পদ্মার তীব্র স্রোতে সবকিছু ভেসে গেছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টি চরাঞ্চলের বাতিঘর। চরের ছোট ছোট প্রায় ২৪ টি গ্রামের ছেলে-মেয়েরা এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। তাদের বেশিরভাগ পদ্মার চরের। এই বিদ্যালয়ের কারণেই চরের এসব গ্রামে শিক্ষা পৌঁছে গেছে। এটিই ছিল চরাঞ্চলের একমাত্র দৃষ্টিনন্দন, বহুতল ভবন ও আধুনিক সুবিধা সম্বলিত উচ্চ বিদ্যালয়।

ভবনটি ২০০৯ সালে নির্মিত হয়। ভবনটি যখন তৈরি হয়, তখন পদ্মা নদী থেকে বিদ্যালয়টির দূরত্ব ছিল চার কিলোমিটার।

এ ছাড়াও, বর্তমানে বন্দরখোলা ইউনিয়নের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক ও একটি বাজার পদ্মার ভাঙনের হুমকিতে আছে বলে জানান স্থানীয়রা।

About Author